Sat. Apr 1st, 2023

(অভিনেতা তথাগত মুখার্জী-র পরিচালনায় আগামী ১১ই  আগস্ট মুক্তি পেতে চলেছে ‘ভটভটি’। সেই ছবিরই  গল্প এবার পরিচালকের কলমে।)

ভটভটির আসল একটা নাম ছিল কোনকালে, সেটা আর কারোর মনে নেই, ভটভটিরও না। ভটভটি যে বস্তিতে থাকে, তার নাম জাহাজবস্তি। ভটভটির গল্প অনুযায়ী জাহাজ বস্তির সবাই জাহাজে করে এসেছে, তাই বস্তির নাম জাহাজবস্তি। গঙ্গার পাড়ের এই বস্তির অন্যান্য ছেলেদের মতোই ভটভটি সকালে জলের তলায় পয়সা কুড়োতে যায় আর তারপর যে যার মত কাজে। ভটভটি বস্তির পাশের শশ্মানের হরিশ্চন্দ্র ডোমের হেল্পার। বস্তির বাকি ছেলেদের সাথে ভটভটির পার্থক্য একটাই, ভটভটি স্বপ্ন দেখতে আর বলতে ভালোবাসে।

ভটভটি অনর্গল গল্প বলে আর আশেপাশের তুচ্ছ জিনিস নিয়ে স্বপ্ন বোনে, বিশ্বাস করাতে চায় স্বপ্নগুলোকে। ভটভটি বিশ্বাসী, ভটভটি বিশ্বাস করে গংগার ঘোলাটে জলের বুকে একটা মস্ত আলোর প্রাসাদ লুকিয়ে আছে, যেখানে জলপরীদের রাজ্য শুরু। মাঝে মাঝে ঐ ঘোলাটে জলে প্রাসাদের দরজা খুজে পেয়েও বারবার হারিয়ে ফেলে ভটভটি।

বাপ মা মরা ভটভটির আপন মানুষ পাখি দি আর হরিশ চন্দ্র ডোম ওকে স্বপ্ন আর বাস্তবের এই ধোঁয়াশা থেকে বার করে আনতে অক্ষম। ভটিভটি বিশ্বাস করে গল্প যখন আছে তাহলে নিশ্চই একটা সত্যি আছে। সেই সত্যিকেই প্রতিনিয়ত খুজে চলে বিশ্বাসী ভটভটি।

তারপর একদিন সত্যি সত্যিই আলোর প্রাসাদের দরজা খুলে যায়। গংগার ঘোলাটে জলে ভটভটি খুজে পায় একটা আস্ত সত্যি জলপরী।যে কিনা কার্টুনে দেখা জলপরী রাজকন্যা “এরিয়েলের” চেয়েও সুন্দরী। যার চোখের ভেতর লুকিয়ে আছে একটা আস্ত আটলান্টিস। আর তার বাস্তবের সত্যিতে লুকিয়ে আছে আগুন। শুরু হয় জাহাজ বস্তিকে এক মায়া রূপকথা।

বস্তির মানুষদের অবিশ্বাস, বস্তি উচ্ছেদের প্রতিনিয়ত হুমকি, দৈনতা কোনোকিছুই স্পর্শ করেনা রাজপুত্র ভটভটিকে। শুরু হয় জলপরী রাজকন্যা এরিয়েলের সত্যি আর ভটভটির বিশ্বাসের এক অত্যার্শ্চয্য যাত্রা। যার সীমানা বস্তি, গঙ্গার ঘাট পেরিয়ে পৌছে যায় এক মায়া জগতে,যে জগতে ভালো আর মন্দ দুজনেরই প্রবেশাধিকার নিষেধ। যে জগতে শুধুই নিরপরাধ, নিষ্পাপদের অনুমতি মেলে প্রবেশের। এ গল্প আগুন আর জলের প্রেমকথা। এ আখ্যান ভটভটির মত নাবিকরা জলপরীদের ফিসফিস করা গানেতে শুনতে পায়, মাঝ সমুদ্রে।

 

 

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!