Sat. Apr 1st, 2023

তাপস রায় : আর নয় হাঁটুর ব্যথা। এবার থেকে চলার কথা। না এটা কোনো বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন নয়।
গত ২১ শে আগস্ট বেলায় সল্টলেকের হোটেল স্ট্যাডেল-এর সেমিনার হলে পূর্বা ইন্টারন্যাশনাল অর্থোপেডিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত একটি আলোচনা চক্রে উঠে এলো এমনই একটি ভাবনা। যেখানে অভিজ্ঞ বিশিষ্ট অর্থোপেডিক সার্জেন ডাঃ সন্তোষ কুমার, ডাঃ দেবাশীষ সারেঙ্গি, ডাঃ বিবেকানন্দ কুমার সহ অন্যান্য চিকিৎসকদের আলোচনায় এবং হাঁটু প্রতিস্থাপনের পর সুস্থ উপকৃত রোগীদের অভিব্যক্তি এই ভাবনায় যেন প্রকাশ পেল।রোবোটিক সার্জারির মাধ্যমে নাম মাত্র রক্তক্ষরণে, স্বল্প সময়ে বিশ্রামের পর হাঁটু, কনুইয়ের প্রতিস্থাপনে অভূতপূর্ব সাফল্যের হার সম্বন্ধে সাংবাদিক সম্মেলনে বলতে গিয়ে ডাঃ কুমার জানান যে ইতিমধ্যে ১৫০০০ এর উপর মানুষ উপকৃত হয়েছেন যা কিনা পূর্ব ভারতে প্রথম।

উপকৃত রোগীদের পক্ষ থেকে এই অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে বেশ উৎসাহী ছিলেন শ্যামলী দেবী। তবে শুধু তিনিই নন, এদিন উপস্থিত অন্যান্য উপকৃতদের মধ্যে প্রাক্তন একজন সরকারি আধিকারিক ডঃ রঞ্জিত কুমার মাইতি জানালেন নিজের অতীতের কষ্ট থেকে বর্তমানে স্বাভাবিক জীবন ছন্দে ফিরে আসার বেশ কিছু কথা যেখানে বার বার ডাঃ সন্তোষ কুমার ও তার টিমের সকলের কাছ থেকে পাওয়া সু-চিকিৎসার প্রশংসা করেন তিনি।

অস্টিওআর্থ্রাইটিসে হাঁটুর অস্থিসন্ধির কার্টিলেজ ক্ষয়ে যায় ও এই ক্ষয় কোনভাবেই পূরণ হয় না। এই ক্ষয়প্রাপ্ত হাড় নার্ভরুটে চাপ দিলেই শুরু হয় অসহ্য ব্যাথা। সঠিক চিকিৎসা অনেক সময় না পাওয়াতে বেশ কিছু মানুষ শয্যাশায়ী হয়ে যান ,আবার কেউ কেউ লাঠি ছাড়া চলতেই পারেন না।

বহু গবেষণার ফলস্বরূপ রোবোটিক সার্জারীর মাধ্যমে এটি আজ অতীত হতে চলেছে। ক্ষয়প্রাপ্ত হাঁটু বদলে কৃত্তিম হাঁটু প্রতিস্থাপন করে মানুষ আবার ফিরে যাচ্ছেন তাঁদের কাজের জগতে।
ভারতের নি জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে ডাঃ সন্তোষ কুমার এই মুহুর্তে একটি উল্লেখযোগ্য নাম। ২০১১ থেকে আজকের দিন পযন্ত তাঁর শুধুমাত্র সফল হাঁটু প্রতিস্থাপনের সংখ্যা ১৫০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এক কথায় সাফল্যের প্রসঙ্গে এই শল্য চিকিৎসায় উপকৃত মানুষ ও চিকিৎসকদের মিলন উৎসবে ডাঃ সন্তোষ কুমার জানান যে,১৯৬৮তে প্রথম কৃত্তিম প্রস্থেসিসের সাহায্যে হাঁটু প্রতিস্থাপন শুরু হওয়ার পর থেকে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই জয়েন্ট সার্জারিতে সাফল্যের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সুতরাং বলাই বাহুল্য যে জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট দিন দিন হয়ে উঠেছে সহজ, নিশ্চিত, নিরাপদ একটি শল্য ব্যবস্থা। হাঁটু প্রতিস্থাপনের পর সকল ব্যক্তিই সমতল থেকে পাহাড় পর্যন্ত বিচরণ সহ পূর্বের মতো সব কাজ স্বাভাবিক ভাবেই করতে পারবেন।

পূর্বা ইন্টারন্যাশানাল অর্থোপেডিক ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে অর্থোপেডিক চিকিৎসায় জনসচেতনতা প্রসারের লক্ষ্যে কাজে করে আসছে। তাদের আয়োজিত এই আলোচনাসভায় উপস্থিত বিশিষ্ট চিকিৎসকদের মতে শুধু চিকিৎসায় আধুনিকীকরণের জন্য অপেক্ষা না করে প্রত্যেককে নিয়মিত জীবন চর্চায় যোগ ব্যায়ামকে স্থান দিতে হবে।

 

উপকৃত রোগী ও তার চিকিৎসকদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ ও ভালো থাকার এই সব কথাই যেন এই নতুন চিকিৎসা পদ্ধতিকে সাধারণের কাছে আস্থার স্থায়ী ঠিকানা করে তুলবে বলেই মত সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকমহলের।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!