গণমিত্র ডেস্ক: সেই কবে কবি-সাংবাদিক কালীপ্রসন্ন ঘোষ লিখে গেছেন “পাঁচজনে পারে যাহা, তুমিও পারিবে তাহা”। তবে কবিতার এই লাইন প্রবাদবাক্যের মত বহুকাল ধরে শিশু-কিশোর সম্প্রদায়ের কান ঝালাপালা করে আসলেও, কজনই বা পারে এই কথাকে সত্যি করতে। অবশ্য আজকের এই ঘোর প্রতিযোগিতার যুগে কবিতার এই বিখ্যাত লাইনের সার কিছুটা বদলে গিয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে নিজেকে পাঁচজনের মত নয়, বরং পাঁচজনের থেকে নিজেকে এগিয়ে থাকার চেষ্টা। আর ঠিক এভাবেই নিজেকে এগিয়ে রাখতে চায় ১০ বছরের মেয়ে অহনা। পুরো নাম অহনা চ্যাটার্জী।
মহেশতলার সাইনি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এই ক্লাস সিক্সের ছাত্রীই এবার বেহালার মুখ উজ্জ্বল করল ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট হ্যাপকিডো চ্যাম্পিয়নশিপ-এ
তৃতীয় স্থান অধিকার করে। একেবারে ৪ বছর বয়স থেকেই ক্যারাটে ট্রেনিং শুরু হয় অহনার। পড়াশোনায় বরাবর ভালো অহনা শুধু ক্যারাটেই নয়, পাশাপাশি তার ওড়িষি নাচের জন্যও এই অল্প বয়সেই রাজ্য ও দেশীয় স্তরের নানান প্রতিযোগিতায় নিজের ঝুলি ভরাতে সক্ষম হয়েছে কখনো ব্রোঞ্জ কখনো রূপো বা সোনার মেডেলে।
মাত্র ছ’বছর বয়সে ফেডারেশন কাপ এ ব্রোঞ্জ পাওয়া অহনা সেদিনের সেই প্রাপ্তির আনন্দ তেমন ভাবে বুঝে উঠতে না পারলেও, স্কুল থেকে স্টেট লেভেল প্রতিযোগিতায় একের পর এক পদকপ্রাপ্তি নিয়ে ঠিক কতটা উৎসাহিত সে? ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি নিয়ে একরত্তি মেয়ে বলে উঠল, “ভীষণই ভালো লাগে। তবে এবার টার্গেট ন্যাশনাল”।
বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত অনির্বাণ চ্যাটার্জী ও নৃত্যঅনুরাগী সোনালী চ্যাটার্জী তাদের একমাত্র মেয়ে অহনাকে নিয়ে কিন্তু বেশ আশাবাদী। তাদের মতে ক্যারাটে থেকে আর্চারি, যখনই যে কাজ করে তাদের মেয়ে তাতে থাকে ভালবাসা ও মনসংযোগ। নানান সাবজেক্টের অলিম্পিয়াড থেকে শুরু করে আর্চারির প্র্যাকটিস। সবেতেই এই ফর্মুলা ব্যবহার করেই অহনা প্রত্যেকবার তাদের গর্বিত করছে। তাদের বিশ্বাস সকলের শুভ কামনায় আগামীতে বাংলার এক ‘সোনা’-র মেয়ে হয়ে উঠতে পারে আজকের এই ছোট্ট অহনা।